ঢাকা , বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫ , ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
একটি দল সম্পর্কে লিখছেন না, সাংবাদিকদের মির্জা আব্বাস আবারও শাহরুখ-মাধুরী জুটিকে দেখতে চায় দর্শক! সমালোচনার জবাব দিলেন প্যারিস জ্যাকসন মারা গেলেন ব্রিটিশ তারকা সাইমন ফিশার ইন্ডাস্ট্রিকে থেকে তারা আমাকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল : গোবিন্দ ইফতারে যোগ দিয়ে তোপের মুখে বিজয় এবার ভারতীয় সিনেমায় দেখা যাবে হানিয়া আমিরকে ভারতের ফিল্মফেয়ারে মনোনীত হলেন বাংলাদেশি তিন তারকা ওমরাহ হজ পালন করতে মক্কায় বর্ষা উত্তোলন করা হলো তানজিন তিশার সহকারীর লাশ শ্রীপুরে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ, যুবক আটক অংশগ্রহণমূলক ভোটের পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করতে চায় যুক্তরাজ্য রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চেয়েছে ঐকমত্য কমিশন আসামিদের পক্ষে দাঁড়াবেন না আইনজীবীরা মধ্যরাতে আদালতে চার আসামি রিমান্ড মঞ্জুর পাচারকৃত টাকা ফেরাতে আগামী সপ্তাহে নতুন আইন -প্রেস সচিব সাবেক ৬৪ সচিবের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে যাচাই করবে সরকার চোখের পাতা নেড়েছে সেই শিশুটি নিরাপত্তায় কঠোর হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার করারোপের আগে বাজার প্রভাব বিশ্লেষণ চান ব্যবসায়ীরা
সুনামগঞ্জ

চোরাকারবারি ও চাঁদাবাজদের গ্রেফতারে নেই অভিযান

  • আপলোড সময় : ১৬-০২-২০২৫ ১০:২৭:১১ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৬-০২-২০২৫ ১১:৩০:১৯ পূর্বাহ্ন
চোরাকারবারি ও চাঁদাবাজদের গ্রেফতারে নেই অভিযান
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তে দীর্ঘদিন যাবত চোরাকারবারি ও চাঁদাবাজদের চলছে রামরাজত্ব। একাধিক মামলার আসামী ও চিহ্নিত চোরাকারবারিরা নিজেদের সোর্স পরিচয় দিয়ে বিজিবি, পুলিশ ও সাংবাদিকদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা উত্তোলন করে প্রতিদিন ভারত থেকে পাচার করছে কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন মালামাল। এর ফলে একদিকে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার, অন্যদিকে চোরাচালানের কারণে নানান দুর্ঘটনাসহ বেড়েই চলেছে মৃত্যুর মিছিল। তারপরও সোর্স পরিচয়ধারী ও চিহ্নিত চোরাকারবারিদের গ্রেফতারের জন্য আজ পর্যন্ত নেয়া হয়নি জোরালো কোনো পদক্ষেপ। জানা গেছে, জেলার তাহিরপুর উপজেলার বালিয়াঘাট ও টেকেরঘাট সীমান্তের লাকমা এলাকা দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে কয়লা পাচার করতে গিয়ে আবারো গুহায় পড়ে রজব আলী নামের এক শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ ওই শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এই দুই সীমান্তে কয়লা পাচার করতে গিয়ে ভারতের ভিতরে তৈরি করা শতাধিক চোরাই কয়লার গুহায় মাটি চাপা পড়ে এপর্যন্ত অর্ধশতাধিক শিশু-কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তারপরও সোর্স পরিচয়ধারী ও তাদের গডফাদার গ্রেফতার হয়নি। জানা গেছে, লালঘাট, লাকমা, টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ও হাইস্কুলের পিছন দিয়েসহ নীলাদ্রী লেকপাড়, বুরুঙ্গা ছড়া, রজনী লাইন এলাকা দিয়ে প্রতিদিন ভোর থেকে কয়লা ও মাদক পাচার শুরু হয়, চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। পাচারকৃত শত শত মে.টন কয়লা বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন নীলাদ্রী লেকপাড়, কয়লার ঘাট ও জয়বাংলা বাজারের পাশে অবস্থিত ২০-৩০টি ডিপুতে ওপেন মজুত করার পর, পাচারকৃত প্রতি বস্তা কয়লা থেকে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে ৫০ টাকা, বিজিবির নামে ১শ টাকা, সোর্স বাবদ ৫০ টাকাসহ স্থানীয় সংবাদকর্মীদের নামে ৫০ টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করে সোর্স পরিচয়ধারীরা। একইভাবে চাঁদা নিয়ে পাশের চাঁনপুর সীমান্তের নয়াছড়া ও গারো ছড়া দিয়ে কয়লা পাচার করা হয়। চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য খ্যাত এই চাঁনপুর সীমান্তের রাজাই, কড়ইগড়াসহ বারেকটিলার আনন্দপুর ও ১২০৩ পিলার সংলগ্ন বিজিবি পোস্টের সামনে দিয়ে ও কাঁঠাল বাগান দিয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় এবং রাতভর ভারত থেকে পাচার করা হয় কোটি টাকার ফুছকা, চিনি, নাসিরউদ্দিন বিড়ি, কম্বল, জিরা, ঘোড়া ও মদসহ অস্ত্র। সম্প্রতি র‌্যাব বারেকটিলা থেকে অস্ত্র উদ্ধার করাসহ একাধিক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের পর এই সীমান্তে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বেড়ে যায়। পাচারকৃত প্রতি বস্তা ফুছকা থেকে বিজিবির নাম ভাঙিয়ে ১৫০ টাকা, পুলিশের নাম ভাঙিয়ে ১শ টাকা, চিনি প্রতিবস্তা বিজিবি ১শ টাকা, পুলিশ ৫০ টাকা, প্রতি খাঁচা নাসিরউদ্দিন বিড়ি বিজিবি ১ হাজার ৫শ টাকা, পুলিশ ১ হাজার টাকাসহ অন্যান্য মালামাল থেকে চুক্তি ভিত্তিক চাঁদা নেয় সোর্স পরিচয়ধারীরা। এই সীমান্তে কয়লা পাচার করতে গিয়ে ও ভাগভাটোয়ারা নিয়ে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারপরও সোর্স ও চোরাকারবারিদের গ্রেফতারের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় না। আরো জানা গেছে, চোরাচালানের নিরাপদ রোড খ্যাত লাউড়গড় সীমান্তের জাদুকাটা নদী ও সাহিদাবাদ বিজিবি পোস্টের সামনে দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে কয়লা ও পাথরসহ উন্মুক্ত বালি পাচার। শত শত ঠেলাগাড়ি বোঝাই করে পাচারকৃত পাথর ও মোটরসাইকেল দিয়ে কয়লাসহ পিকআপ ও মাহিন্দ্র গাড়ি বোঝাই করে বালি বিজিবি ক্যাম্পের সামনের রাস্তা দিয়ে ওপেন পরিবহন করা হলেও রহস্যজনক কারণে কোনো পদক্ষেপ নেয় না বিজিবি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকে এই সীমান্তে আওয়ামী লীগের স্থানীয় চোরাকারবারিরা সিন্ডিকেটে তৈরি করে ওপেন বাণিজ্য করছে। তাদের নেতৃত্বে সীমান্ত চোরাচালান করতে গিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের হাতে ও বিএসএফের তাড়া খেয়ে জাদুকাটা নদীতে ডুবে ও গুলিতে এ পর্যন্ত শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে। তারপরও চিহ্নিত চোরাকারবারি ও সোর্সদের গ্রেফতার করাসহ তাদের কোটি কোটি টাকার অবৈধ অর্থ-সম্পদ উদ্ধারের জন্য নেই কোনো পদক্ষেপ। একইভাবে চারাগাঁও সীমান্তের লালঘাট, বাঁশতলা, এলসি পয়েন্ট, জংগলবাড়ি ও কলাগাঁও এলাকা দিয়ে একাধিক মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগ নেতারা নিজেদের বিজিবি ও পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে সাংবাদিক ও প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা উত্তোলন করে গত ১৫ বছর যাবত কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ওপেন কয়লা ও চুনাপাথরসহ মাদকদ্রব্য পাচার করে কোটিপতি হয়ে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। অথচ ওই সব সোর্স পরিচয়ধারীদের কারণে চারাগাঁও সীমান্তে কয়লা পাচার করতে গিয়ে গুহায় মাটি চাপা পড়ে ও চোরাচালান নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় এপর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যু হচ্ছে। একইভাবে বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের লামাকাটা, সুন্দরবন ও কচুয়াছড়া এলাকা দিয়ে সোর্স পরিচয়ধারীরা মাদকদ্রব্য, চিনি, সুপারি, ফুছকা, গরু ও মাছসহ কসমেটিকস পাচার করছে বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। এব্যাপারে সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাকারিয়া কাদির বলেন, সীমান্ত সুরক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধ করার জন্য বিজিবির অভিযান অব্যাহত আছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য